Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এক নজরে

গোদাগাড়ী বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। একদিকে কীর্তিনাশা পদ্মা আর মহানন্দা অন্যদিকে বিস্তৃত পরিধিতে বরেন্দ্র জনপদ এই গোদাগাড়ী অঞ্চল।

অবস্থান[সম্পাদনা]

গোদাগাড়ী উপজেলা রাজশাহী জেলার পশ্চিমে অবস্থিত। গোদাগাড়ী উত্তরে তানোর উপজেলা, পূর্বে পবা উপজেলা, দক্ষিণে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলা ও ভগবান গোলা থানা এবং পশ্চিমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কর্তৃক পরিবেষ্টিত।[২]

উপজেলার ইতিহাস[সম্পাদনা]

রাজশাহী জেলার একটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ উপজেলা গোদাগাড়ী। গোদাগাড়ীর নামকরণ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। প্রথমতঃ ইতিবৃত্তের আকারে দেখতে গেলে জানা যায়, বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রী চৈতন্যদেব ধর্ম প্রচারের নিমিত্তে পূর্ববঙ্গ থেকে গঙ্গা বেয়ে প্রেমতলীতে স্নান করে গৌড় গমন করেন। পরে কিংবদন্তীর পর্যায়ে কথিত আছে প্রেমতলীর বৈষ্ণব ধর্মের আনুষ্ঠানিকতায় শ্রী চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব প্রেমী ভাব শিষ্য শ্রী গোদা পরবর্তীতে বৈষ্ণব ধর্ম প্রচারে এ এলাকায় এসে মহাগুরুর স্নান তর্পনকে ভক্তি ভরে স্মরণ করে প্রত্যেক পূর্নিমা তিথিতে স্নানে যেতেন প্রেমতলীর তমাল তলার ঘাটে। যাবার পথে যানবাহন হিসেবে গরুর গাড়ী ব্যবহার করতেন। রাতের বেলায় গরুর গাড়ীর একটা আওয়াজ হতো। লোকে বলত কার গাড়ী যায়? উত্তর আসত ‘গোদার গাড়ী’। জনশ্রুতি রয়েছে এই ‘গোদার গাড়ী’ থেকেই ‘গোদাগাড়ী’ নামের উৎপত্তি হয়েছে।

আবার অনেকে মনে করেন এ জনপদের নাম গোদাগাড়ী নয় গোদাগারী। পুরনো দিনের মানচিত্রে এর সত্যতা মেলে। ‘গোদা’ শব্দের অর্থ হলো দেহ, তনু, কায়া এবং গারী শব্দের অর্থ রক্ষা করা। সুতরাং ‘গোদাগারী’ হচ্ছে নিরাপদ স্থান বা সুরক্ষিত স্থান। সুদীর্ঘ কাল হতে গোদাগারী নিরাপদ স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। লোকমুখে প্রচলিত হতে হতে গোদাগারী > গোদাগাড়ী হয়ে যায় (তাড়নজাত ধ্বনির বিবর্তন র > ড়)। নবাব আলিবর্দী খাঁর শাসনামলে বর্গীয় হাঙ্গামায় অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে (১৭৪১-১৭৪৪) যখন দেশবাসী শঙ্কিত, উৎকণ্ঠিত তখন বৃদ্ধ নবাব আলিবর্দী খাঁ ডেপুটি গভর্নর নোয়াযেশ মুহাম্মদ খানের নেতৃত্বে ও তত্ত্বাবধানে নবাব প্রাসাদের মূল্যবান দ্রব্য সামগ্রী, অর্থসম্পদ, সোনাদানাসহ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে এই গোদাগাড়ীতে স্থানান্তরিত করেছিলেন এবং গোদাগাড়ীর অদূরে বারুইপাড়া গ্রামে একটি শিবির ও কেল্লা নির্মাণ করে নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

জনশ্রুতি রয়েছে দূর অতীতে এখানে ‘গোদাবারি’ নামে একজন প্রভাবশালী ধোপা বসবাস করত। ধোপার স্ত্রী ছিলেন ব্যাভিচারিণী। গোদাবারি নামক এই ধোপা তারা স্ত্রীকে কাদায় গেড়ে (পুঁতে) ফেলেন। গোদা কর্তৃক তার স্ত্রীকে গেড়ে ফেলা থেকেই ‘গোদাগাড়ী’ নামকরণ হয়েছে ধারণা করা হয়।

প্রশাসনিক এলাকা[সম্পাদনা]

১৮৬৫ সালে গোদাগাড়ী থানা প্রতিষ্ঠত হয় এবং ১৯৮৪ সালে উপজেলাতে রুপান্তরিত হয়। ৯টি ইউনিয়ন, ৩৮৯টি মৌজা এবং ৩৯৬টি গ্রাম বিশিষ্ট একটি থানা।[২]

ইউনিয়ন সমূহ[সম্পাদনা]

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

মোট জনসংখ্যা ২,৭৯,৫৪৫ জন ( পুরুষ-১,৪৩,২০২ জন, মহিলা-১,৩৬,৩৪৩ জন)।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

গোদাগাড়ী উপজেলায় সরকারী ৭৬টি, বেসরকারী ৭৪টি, মোট ১৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬২টি, ৩০টি মাদ্রাসা, ১২টি কলেজ রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এনজিও শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলের শিক্ষার হার ৪৬.৩০%।[৩]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

উপজেলা সম্পূর্ণ কৃষি নির্ভর। কৃষি উৎপাদিত ফসলের মাঝে ধান, গম, আলু উল্লেখযোগ্য। গোদাগাড়ী উপজেলায় সারাবছর ধান, গম, ভুট্টা, পাট, ছোলা, আলু, টমেটো, আখ, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, আপেল কুল, লিচুসহ বিভিন্ন ফল ও বনজ গাছ রয়েছে। সরকারী ও বেসরকারী পুকুরে মাছ চাষ করা হচ্ছে। পদ্মা ও মহানন্দার মোহনায় পাঙ্গাস মাছ সংরক্ষণের একমাত্র স্থান হচ্ছে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ এলাকা।[২]

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

  • সাফিনা পার্ক
  • খেতুরীধাম
  • সরমংলা ইকোপার্ক
  • খেতুর গ্রামে পাইকড় তিন তলায় একটি দরশনীয বাড়ী।
  • ঠাকুর নরোত্তম দাসের বাড়ী - গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী নামকস্থানে সনাতন ধর্মের সবচাইতে বড় তীর্থ স্থান
  • শাহ্‌ সুলতান এর মাজার
  • কদমশহরে সেন রাজাদের রাজধানীর ধ্বংশাবশেষ
  • আলিবর্দি খা-র কেল্লা ধ্বংশস্তুপ

মৃত: মোঃ খলিলুল্লাহ (মহাজন)। তাঁর বাড়ি গোদাগাড়ী ইউনিয়নের আই হাই (রাহী) গ্রামে।তিনি বাংলায় কাব্যাকারে সম্পূর্ণ কুরআন অনুবাদ করেন।এছাড়াও তিনি প্রচুর কবিতা ও ছড়া রচনা করেন এবং গোদাগাড়ীর ইতিহাস নামেও একটি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন।কিন্তু এগুলো অপ্রকাশিত।তিনি একজন শিক্ষানুরাগী ছিলেন।তিনি বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-লাইব্রেরি-ক্লাব স্থাপনে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।তিনি একজন দাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।